নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু | Netaji Subhas Chandra Bose
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু |
নমস্কার বন্ধুরা,
আজ আমি আপনাদের কাছে তুলে ধরছি বাঙালি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নেতা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য । আমার আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা নেতাজির জীবনী সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন । ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অপরাজেয় দেশগৌরব নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু । নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে বাদ দিলে আমরা কখনো ভারতের স্বাধীনতার কথা ভাবতে পারতাম না ।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু জীবনী :
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhas Chandra Bose) ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের শ্রেষ্ঠ নেতা । সুভাষচন্দ্র বসু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন ।
সুভাষচন্দ্র বসু সকল ভারতবাসীর কাছে "নেতাজি " নামে পরিচিত । 23 জানুয়ারি , 2022 সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর 125 তম জন্মবার্ষিকীতে ভারত সরকার নেতাজির জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় পরাক্রম দিবস পালনের কথা ঘোষণা করেন ।
"তোমরা আমাকে রক্ত দাও,
আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব"
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম পরিচয়
ভারত জননীর কোলে 1897 সালে 23শে জানুয়ারি সুভাষ চন্দ্র বসু জন্মগ্রহণ করেন । নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ব্রিটিশ ভারতে উড়িষ্যা প্রদেশে (স্বাধীন ভারতে ওড়িশা রাজ্য ) কটকে জন্মগ্রহণ করেন ।
নাম | নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু |
জন্মতারিখ | 23শে জানুয়ারি, 1897 |
জন্মস্থান | ব্রিটিশ ভারতের বঙ্গ প্রদেশের উড়িষ্যা বিভাগের কটকে (স্বাধীন ভারতের ওড়িশা রাজ্যে) |
পিতার নাম | জানকীনাথ বসু |
মাতার নাম | প্রভাবতী দেবী |
স্ত্রীর নাম | এমিলি শেঙ্কল |
জাতীয়তা | ভারতীয় (বাঙালি) |
রাজনৈতিক দল | ফরওয়ার্ড ব্লক |
ভারত ত্যাগ | 1943 |
মৃত্যু | অমীমাংসিত |
ভারতের গৌরব নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু গৃহপত্নী প্রভাবতী দেবী ও উকিল জানকীনাথ বসুর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন । নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ছিলেন তাহার পিতামাতার ষষ্ঠ সন্তান ।
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর শিক্ষাজীবন
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু উড়িষ্যা রাজ্যের কটকে শহরে বেড়ে ওঠেন, সেই সূত্রে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় প্রোটোস্ট্যান্ট স্কুলে । সুভাষচন্দ্র বসু ছেলেবেলা থেকেই স্বাধীন চিন্তা ধারার অধিকারী ছিলেন । প্রোটোস্ট্যান্ট স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে, 1913 সালে ভর্তি হন র্যাভেনস কলেজিয়েট স্কুলে । নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কলেজের প্রবেশিকা পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন এবং ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে । রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর দর্শন শাস্ত্রে অনার্স নিয়ে ভর্তি হন স্কটিশচার্জ কলেজে । স্কটিশচার্জ কলেজ থেকে বি. এ. পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণির অনার্স লাভ করার পর , পিতা মাতার ইচ্ছা অনুযায়ী ইংল্যান্ডে যান আই. সি. এস. পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে । 1920 সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আই. সি. এস. পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেন ।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কর্মজীবন
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ছিলেন সুবুদ্ধি সম্পন্ন, সমাজসেবক ও দেশপ্রেমিক কর্মযোগী মানুষ । কর্মজীবনের শুরুতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু শিক্ষালয়ের অধ্যক্ষ পদ গ্রহণ করেন । একই সময় তিনি কংগ্রেস কমিটির সচিব পদে নিযুক্ত হন । পরবর্তীতে নেতাজি "ফরওয়ার্ড" পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন । 1924 সালে 14 এপ্রিল সুভাষচন্দ্র বসু কলকাতা পৌর নিগমের প্রধান কার্যনির্বাহী পদে নিযুক্ত হন ঠান্ডা ।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর রাজনৈতিক জীবন
1922 সালে নীতিগত মতবিরোধের জন্য মতিলাল নেহেরুর সহযোগিতায় সুভাষচন্দ্র বসু স্বরাজ্যদল গঠন করেন । 1923 সালে সাধারণ নির্বাচনে সুভাষচন্দ্রের স্বরাজ্যদল জয় লাভ করে । 1924 সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে গ্রেফতার করলেন । দীর্ঘ আড়াই বছর পর তৎকালীন বাংলার গভর্নর স্যার স্ট্যানলি জ্যাকসন 1927 সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি আদেশ দেন । 1938-1939 নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু নিখিল ভারত কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ইংরেজদের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বে বিরতি তার বীজ গ্রহণ করতে চাইছিলেন । ইংলিশ সরকার বুঝতে পেরে সুভাষচন্দ্র কে নজর বন্দী করে, ইংরেজ পুলিশদের চোখ ফাঁকি দিয়ে 1941 সালে 26শে জানুয়ারি নেতাজি ছদ্মবেশে দেশ ত্যাগ করেন । জাপানে পৌঁছে নেতাজি সুভাষ আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায় পথ গ্রহণ করেন এবং দিল্লি চলো স্লোগানের মাধ্যমে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দিলে লাল কেল্লা দখল করা । নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বাধীন আজাধীন ফৌজ উত্তর পূর্ব ভারতের ইমফলে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন । যদিও নেতাজি সুভাষের আজাধীন ফৌজ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেনি তবুও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে আজাদ হিন্দ ফৌজ একটি দৃষ্টান্তমূলক অধ্যায় ।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু রহস্য
1945 সালে জাপানের তাইহুক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করার পর নিমন্তর ঘটনায় তার মৃত্যু হয় বলে জাপান সরকারের পক্ষ থেকে প্রচার করা হয় । অনেক ভারতবাসী মনে করেন সেদিন কোনো বিমান দুর্ঘটনা হয়নি, অনেকে মনে করেন নেতাজিকে সাইবেরি আর কোন জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছিল । নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের মৃত্যু নিয়ে ভারতবাসীর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে । পরবর্তী সময়ে ভারত সরকার নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের মৃত্যু তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করলেও সেই কমিটি নেতাজি সুভাষ এর মৃত্যুর ব্যাপারে কোন প্রকার সদ উত্তর দিতে পারেনি ।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন
- ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির নেতা কে ছিলেন ? উত্তর: সুভাষ চন্দ্র বোস ।
- সুভাষচন্দ্র বসু কার গঠিত হওয়ার কথা কোথায় ঘোষণা করেন ? উত্তর: সিঙ্গাপুর ।
- নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর হাতে আজাদ হিন্দ ফৌজের দায়িত্ব কে তুলে দিয়েছিলেন ? উত্তর: রাজবিহারী বোস ।
- কত সালে আজাধীন ফৌজ গঠিত হয় ? উত্তর: 1লা সেপ্টেম্বর, 1942 ।
- আজাদ হিন্দ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ দখল করে অস্থায়ী আজাধীন ফৌজ সরকার প্রথম স্বাধীন ভারতীয় ভূখণ্ড হিসেবে নামকরণ করেন - "শহীদ " ও "স্বরাজ" দ্বীপ ।
- কত সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আজাধীন ফৌজ সরকার গঠন করেন ? উত্তর: 21শে অক্টোবর, 1943 ।
- নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কি ছদ্মনামে ভারত ত্যাগ করেন ?
উত্তর: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছদ্মনাম ছিল অরল্যান্ডো মাজোট্টা ।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু জীবনী PDF Download
File Details::
File Name : নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু জীবনী
File Format : PDF
No. of Pages : 3
No comments:
Post a Comment
don't share any link